রাজবাড়ী জেলায় মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ চাষের সুনাম দীর্ঘকালের। পদ্মা তীরবর্তী পলিমাটির উর্বর জমিতে পেঁয়াজের ফলন ভাল হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে দেশের মোট ১৩ শতাংশ চাহিদা পুরন করে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে প্রচুর। সরোজমিনে রাজবাড়ী জেলার কালুখালি উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের বীজয়নগর,কৃষœনগর, লস্করদীয়া, চররাজপুর,এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মাঠকে মাঠ মুরিকাটা পেঁয়াজের আবাদ। বীজয়নগর এলাকার আঃ বারেক শেখের ছেলে মোঃ ফরিদ শেখ বলেন, আমি এ বছর ৭ বিঘা (২ একর ১০ শতাংশ) জমি পেঁয়াজের (মুড়ি কাটা) আবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা, যদি আল্লাহ ভাল ফলন দেয় তবে বিঘা প্রতি ৪০ মন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে যার বর্তমান বাজার মুল্য ২৮ হাজার টাকা। যদি এ দাম অব্যাহত থাকে তবে মোটা অংকের লোকশান গুনতে হবে। একই সুরে কথা বলেন কৃষক মোজাম শেখ, হাকিম শেখ,ও কৃঞ্চনগর এলাকার কৃষক আতাহার হোসেন। তারা বলেন এ অঞ্চলের কৃষকরা অত্যান্ত গরিব যে কারণে এরা ফসল বপনের সময়ই চরা সুদে এনজিও থেকে লোন নিয়ে আবাদ শুরু করে। এ বছর ফসলের ফলন ভাল হলেও ন্যায্য মুল্য না পেলে কৃষকদের লোকশান গুনতে হবে। সে ক্ষেত্রে বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকারের প্রতি দাবী বিদেশি পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে কৃষকের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করুন। রাজবাড়ী কৃষি উপ-পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, রাজবাড়ীর মাটি অত্যান্ত উর্বর হওয়ায় এ অঞ্চলে মোট ৭৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমির ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এবং রাজবাড়ীর উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়েই দেশের মোট চাহিদার ১৩ শতাংশ পুরন করা হয়। তিনি আরো বলেন রাজবাড়ীতে তিন ধরনের পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, মড়িকাটা পেঁয়াজ, হালি পেঁয়াজ ( পেঁয়াজের বীজ থেকে উৎপাদিত চারা থেকে পেঁয়াজ উৎপাদন) কদম পেঁয়াজ, ( পেঁয়াজ থেকে বীজ উৎপাদন) গত বছর রাজবাড়ীতে ২ লক্ষ ৮১ হাজার ৮ শত মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। আমরা আশা করছি এ বছরও সমপরিমান বা এর চেয়েও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হবে।